NID তথ্য ভুল? ২০২৫ সালের অনলাইন ও অফলাইন নিয়ম অনুযায়ী কীভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করবেন, তা ধাপে ধাপে জানুন এই গাইডে।
Table of Contents
জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) একজন নাগরিকের পরিচয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি।
এই কার্ডে থাকা তথ্য যদি ভুল হয়, তাহলে সরকারি-বেসরকারি অনেক সেবা গ্রহণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
নাম, জন্ম তারিখ, ঠিকানা বা অন্য যেকোনো তথ্য ভুল থাকলে তা সংশোধন করা অত্যন্ত জরুরি।
২০২৫ সালে অনলাইন ও অফলাইন দুই পদ্ধতিতে সহজেই NID সংশোধন করা সম্ভব।
NID সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য কিছু নির্দিষ্ট ডকুমেন্টস নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দিতে হয়।
যে তথ্য পরিবর্তন বা সংশোধন করতে চান, তার উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভিন্ন হতে পারে।
নিচে নাম ও জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য আবশ্যক ডকুমেন্টগুলোর তালিকা তুলে ধরা হলো।
নাম সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
যদি আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রে নামের বানান ভুল থাকে বা নামের আংশিক পরিবর্তন প্রয়োজন হয়, তাহলে নিচের ডকুমেন্টগুলো লাগবে:
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র (SSC/Equivalent)
- অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- পাসপোর্ট / ড্রাইভিং লাইসেন্স / চাকরির পরিচয়পত্র (যদি থাকে)
এছাড়া প্রয়োজন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কোনো এফিডেভিট বা আদালতের আদেশ লাগতে পারে।
সব ডকুমেন্ট অবশ্যই বৈধ ও আপডেটেড হতে হবে।
জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
জন্ম তারিখের সামান্য ভিন্নতা থাকলেও তা ভবিষ্যতে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করতে পারে।
এ কারণে নিচের কাগজপত্রগুলো দাখিল করে জন্ম তারিখ সংশোধনের আবেদন করতে হয়:
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র (প্রাথমিক/মাধ্যমিক বা সমমান)
- অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- পাসপোর্ট / ড্রাইভিং লাইসেন্স (যদি পূর্বে তৈরি থাকে)
জন্ম তারিখ সংশোধন সাধারণত একবারের বেশি করা যায় না।
তাই সঠিক প্রমাণপত্র দাখিল করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অনলাইন মাধ্যমে NID সংশোধনের প্রক্রিয়া
বর্তমানে বাসায় বসেই জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করা সম্ভব।
ইলেকশন কমিশনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি সহজেই অনলাইন আবেদন করতে পারেন।
এই প্রক্রিয়ায় সময় ও খরচ কম লাগে, এবং যেকোনো স্থান থেকে আবেদন করা যায়।
অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া
জাতীয় পরিচয়পত্র অনলাইনে সংশোধনের জন্য আপনাকে প্রথমে ইসি’র ওয়েবসাইটে যেতে হবে:
- services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করুন।
নতুন ইউজার হলে মোবাইল ও জন্মতারিখ দিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। - প্রোফাইলে লগইন করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংশোধন করুন।
যেমন: নাম, জন্ম তারিখ, ঠিকানা ইত্যাদি। - সঠিক প্রমাণপত্র স্ক্যান করে আপলোড করুন।
এরপর আবেদন সাবমিট করে রেফারেন্স নাম্বার সংরক্ষণ করুন।
এটি একটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতি, ফলে ফলোআপ বা স্ট্যাটাস চেকও অনলাইনে করা যায়।
ফি পরিশোধের পদ্ধতি
NID সংশোধনের জন্য একটি নির্দিষ্ট ফি নির্ধারিত আছে, যা আপনি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবেন।
- বিকাশ, রকেট অথবা নগদ ব্যবহার করে সহজেই ফি প্রদান করা যায়।
- সাধারণত তথ্য সংশোধনের জন্য ফি ২৩০ টাকা থেকে ৩৪৫ টাকা পর্যন্ত হতে পারে, সংশোধনের ধরন অনুযায়ী।
অনলাইনে আবেদন সাবমিট করার পর আপনি একটি পেমেন্ট অপশন দেখতে পাবেন, যেখান থেকে পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে টাকা জমা দেওয়া যাবে।
অফলাইন মাধ্যমে NID সংশোধনের প্রক্রিয়া
যারা অনলাইন প্রক্রিয়ায় অভ্যস্ত নন কিংবা যাদের প্রমাণপত্র স্ক্যান ও আপলোড করার সুযোগ নেই, তারা অফলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে পারেন।
এই পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে সরাসরি গিয়ে আবেদন করতে হয়।
সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে আবেদন
অফলাইনে সংশোধনের জন্য আপনাকে প্রথমে আপনার এলাকার উপজেলা বা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অফিসে যেতে হবে।
সেখানে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়:
- সংশোধন ফরম সংগ্রহ ও পূরণ করুন:
নির্বাচন অফিস থেকে নির্ধারিত ফরম সংগ্রহ করুন বা election.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
প্রয়োজনীয় তথ্য নির্ভুলভাবে পূরণ করুন (যেমন: নাম, জন্মতারিখ, ঠিকানা)। - প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিন:
সংশ্লিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে প্রমাণপত্র সংযুক্ত করতে হবে।
যেমন: জন্ম নিবন্ধন সনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, পাসপোর্ট ইত্যাদি।
সমস্ত ডকুমেন্টসের ফটোকপি সত্যায়িত করতে হবে। - আবেদন জমা দিন:
ফরম ও ডকুমেন্টস জমা দেওয়ার পর অফিস কর্তৃপক্ষ আবেদন গ্রহণ করবে এবং একটি রিসিভ কপি/অ্যাকনলেজমেন্ট দেবে।
ফি পরিশোধ এবং রসিদ সংগ্রহ
NID সংশোধনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি অফলাইনে পরিশোধ করতে হয়।
সাধারণত অফিস থেকেই আপনাকে পরিশোধ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হবে।
ফি পরিশোধের পদ্ধতি:
- নির্ধারিত ব্যাংক বা মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে হবে।
- অনেকে অফিসে থাকা সেবা ডেস্ক বা কিউআর কোড স্ক্যানার ব্যবহার করে সরাসরি বিকাশ/রকেটেও ফি পরিশোধ করতে পারেন।
রসিদ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ:
- ফি পরিশোধের পর একটি পেমেন্ট রসিদ/চালান কপি পাবেন।
- এটি আবেদন প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তাই ভবিষ্যতের জন্য এটি সংরক্ষণ করে রাখা উচিত।
আরো জানুন-
- কীভাবে ফাইভার গিগ প্রমোট করে সফল হবেন
- কলা খাওয়ার পুষ্টিকর দিক এবং সতর্কতা
- অনলাইনে ইনকাম করার উপায়: নতুনদের জন্য সহজ গাইডলাইন
NID সংশোধনের পরবর্তী প্রক্রিয়া এবং সময়সীমা
জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) সংশোধনের জন্য আবেদন করার পর অনেকেই প্রশ্ন করেন, “আবেদন করার পর কী হয়?“
এই ধাপে মূলত নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট দপ্তর আপনার জমাকৃত তথ্য এবং প্রমাণপত্র যাচাই করে।
এখানে আমরা আলোচনা করবো–
✅ কতদিনে সংশোধন সম্পন্ন হয়
✅ সংশোধিত কার্ড কিভাবে পাওয়া যায়
✅ আবেদন বাতিল হলে করণীয় কী
আবেদন অনুমোদন এবং কার্ড সংগ্রহ
আবেদন জমা দেওয়ার পর, নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট তথ্য যাচাই করে অনুমোদন প্রদান করে।
সাধারণত ১০ থেকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশোধনের কাজ শেষ হয়ে যায়, তবে এটি সময়সীমা ও অফিসের কার্যক্ষমতার ওপর নির্ভর করে।
আবেদন অনুমোদনের সময়সীমা:
- অনলাইনে আবেদন করলে SMS বা পোর্টালের মাধ্যমে স্ট্যাটাস জানা যায়।
- অফলাইন আবেদনকারীরা সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করে আপডেট জানতে পারেন।
সংশোধিত কার্ড সংগ্রহের পদ্ধতি:
- অনলাইন আবেদনকারীরা সংশোধিত কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন (PDF/ডিজিটাল কপি)।
- অফলাইন আবেদনকারীদের সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে কার্ড সংগ্রহ করতে হবে।
- স্মার্ট কার্ডের ক্ষেত্রে, সময়সীমা একটু বেশি হতে পারে।
আবেদন বাতিল হলে করণীয়
অনেক সময় তথ্য অসঙ্গতি, ভুল ডকুমেন্ট বা অস্পষ্ট প্রমাণপত্রের কারণে NID সংশোধনের আবেদন বাতিল হয়ে যেতে পারে।
এই ক্ষেত্রে হতাশ না হয়ে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
আবেদন বাতিলের সাধারণ কারণসমূহ:
- জমাকৃত ডকুমেন্টে অস্পষ্টতা বা ভুল
- তথ্য গড়মিল
- সঠিকভাবে ফি পরিশোধ না হওয়া
- নির্ধারিত সময়সীমার বাইরে আবেদন জমা দেওয়া
পুনরায় আবেদন করার পদ্ধতি:
- বাতিল হওয়ার কারণ জেনে নিন (SMS/স্ট্যাটাস বা অফিসে সরাসরি গিয়ে)।
- ভুল সংশোধন করুন এবং সঠিক ডকুমেন্ট আপলোড বা জমা দিন।
- পুনরায় সংশোধন আবেদন ফরম পূরণ করে যথাযথভাবে ফি পরিশোধ করুন।
এবার আবেদন গ্রহণের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকবে
এরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে চাইলে ভিজিট করুন akhane . com